কাঁচা হলুদের গুড়া:
মসলাজাতীয় ফসলের তালিকায় শীর্ষ ব্যবহারযোগ্য ফসলের মধ্যে হলুদ অন্যতম। কাঁচা হলুদ থেকে শুরু করে গুঁড়া হলুদের ব্যবহার ব্যাপক। নিত্য খাবার ব্যঞ্জনের রঙ করার উদ্দেশ্যেই প্রধানত এর ব্যবহার হয়ে থাকে তা নয়। শারীরিক প্রয়োজনেও হলুদের ব্যবহার হয়ে থাকে। শুধুমাত্র হলুদ দিয়েই রোগ নিরাময়ে বহুমাত্রিক ব্যবহার সম্ভব।
হলুদের পুষ্টিগুণ:
হলুদের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কিছু তথ্য বলে রাখি। আমেরিকার কৃষি বিভাগের জাতীয় পুষ্টিগুণ তথ্যপঞ্জি মতে, ১ টেবিল চামচ হলুদগুঁড়ায় পাওয়া যায় ২৯ ক্যালরি, শূন্য দশমিক ৯১ গ্রাম প্রোটিন, শূন্য দশমিক ৩১ গ্রাম চর্বি, ৬ দশমিক ৩১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ দশমিক ১ গ্রাম আঁশ ও শূন্য দশমিক ৩ গ্রাম গ্লুকোজ। এ ছাড়া পাওয়া যায় দৈনিক চাহিদার ২৬ শতাংশ ম্যাংগানিজ, ১৬ শতাংশ আয়রন, ৫ শতাংশ পটাশিয়াম, ৩ শতাংশ ভিটামিন সি এবং সামান্য পরিমাণ ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, কপার ও জিংক। এত সব পুষ্টি উপাদানের উপকারিতা বিচারে হলুদকে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার অন্যতম উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।হলুদে পুষ্টিগুণ তো আছেই, সেই সঙ্গে আছে বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধকারী ক্ষমতা।
কাঁচা হলুদের ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায় যেমন:মুখের রঙ উজ্জ্বল্যে,দাগ দূর করতে ,পেটের ক্রিমিতে,হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে,ব্রণ নিরাময়ে,রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ইত্যাদি উপকারিতা পাওয়া যায় কাঁচা হলুদ থেকে।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা:
মুখের রঙ উজ্জ্বল্যে :
হলুদের এক নাম ‘হরিদ্রা’। মুখের লালিত্য বজায় রাখার জন্য মসুর ডাল ও কাঁচা হলুদ বেটে দুধের সর মিশিয়ে মুখে ও হাতে মাখতে হবে। ২ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন এবং ১ মাস ধরে ব্যবহার করুন।
দাগ দূর করতে:
রোদে পোড়া দাগ, বয়সের বলিরেখা, ত্বকের ছোপ ছোপ কালো দাগ দূর করতে কাঁচা হলুদের সাথে সামান্য পরিমান শসার রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখুন পনেরো-বিশ মিনিট। কিছুদিনের মাঝেই দাগ দূর হবে। ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
ব্রণ নিরাময়ে :
সকালে খালি পেটে ২ টুকরো কাঁচা হলুদ ও ২টা নিমপাতা একসঙ্গে (আখের গুড়সহ) মিশিয়ে খেলে ব্রণ সেরে যায় আবার দেহের রঙও উজ্জ্বল হয়।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
হলুদের লাইপোপলিস্যাকারাইড দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল এজেন্ট প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। এরূপ শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠান্ডা, সর্দি, কাশি হওয়ার প্রবণতাকে রোধ করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:
রক্তনালীর অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়, এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। হলুদ রক্তনালীর কার্যক্রম সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে:
ক্যানসারের মত জটিল রোগ রোধ করতে হলুদ অনেক বেশি কার্যকরী। ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি এবং ছড়িয়ে পড়া রোধে হলুদ সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি মুখগহ্ববরের ক্যানসার রোধ করে থাকে।
No comments:
Post a Comment